সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ)।পর্ব- ৫ (শেষ পর্ব)

 

স্মরণীয় বীরঃ

সামরিকঃ


খালিদ (রাঃ) প্রথম যুগের অনেক মুসলিম সামরিক বিধির প্রণেতা ছিলেন। প্রথম যুগে মুসলিম অভিযানের সময় তিনি মুসলিমদের ব্যবহৃত প্রায় সব প্রধান কৌশলের পথপ্রদর্শক ছিলেন। আরব বেদুইন যোদ্ধাদের ব্যক্তিগত দক্ষতাকে বৃহদাকারে কাজে লাগানো তার অন্যতম প্রধান অর্জন ছিল। তিনি মুবারিজুন নামক ইউনিট গঠন করেছিলেন। এই ইউনিটের সদস্যরা উচ্চপ্রশিক্ষিত ছিল। প্রতিপক্ষের প্রধান যোদ্ধাদের সাথে লড়াইয়ে তাদেরকে খালিদ (রাঃ) সফলভাবে ব্যবহার করেছিলেন যাতে শত্রুর মনোবল ভেঙে যায়। আজনাদয়ানের যুদ্ধ এই প্রকার মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ের একটি উত্তম দৃষ্টান্ত। খালিদ (রাঃ) পূর্ব পর্যন্ত আরবরা মূলত ক্ষুদ্র সংঘর্ষে অংশ নিত কিন্তু তাদের এই ক্ষুদ্র সংঘর্ষের কৌশলগুলিকে তিনি বৃহদাকারে কাজে লাগান। তিনি তার বাহিনীকে শত্রুর সামনে নিয়ে আসতেন এবং সম্পূর্ণ যুদ্ধ বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে ক্ষুদ্র সংঘর্ষে পরিণত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন। প্রতিপক্ষের ইউনিটগুলি বিক্ষিপ্ত হয়ে যাওয়ার পর তিনি তার অশ্বারোহীদের সহায়তায় প্রতিপক্ষের পার্শ্বভাগ থেকে হাতুড়ি ও নেহাই কৌশলে আক্রমণ পরিচালনা করতেন।পুরো সামরিক জীবনে মূল যুদ্ধ, ছোট খণ্ডযুদ্ধ, একক দ্বন্দ্বযুদ্ধ মিলিয়ে খালিদ প্রায় ১০০টি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানা যায়। আজীবন অপরাজিত যোদ্ধা হওয়ায় তাকে ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম সেনাপতিদের অন্যতম বিবেচনা করা হয়।

তার ব্যবহৃত কৌশলগুলিতে তার মূল মেধা নিহিত ছিল। তিনি প্রতিপক্ষকে শুধুমাত্র পরাজিত না করে নিঃশেষ করার উপর জোর দিতেন। ওয়ালাজার যুদ্ধে পার্সিয়ানদের বিরুদ্ধে পিনাসার মুভমেন্ট কৌশল ব্যবহার এর একটি উদাহরণ। ইয়ারমুকের যুদ্ধে  তিনি বাইজেন্টাইন বাহিনীকে পালানোর একমাত্র পথটি দখল করে নিয়ে তাদেরকে তিন দিকের খাড়া গিরিখাত দ্বারা আবদ্ধ করে ফেলেন।

কৌশলগত সুবিধা অর্জনের জন্য খালিদ (রাঃ) যুদ্ধের সময় ভূপ্রকৃতির উপর তার জ্ঞান কাজে লাগিয়েছেন। পারস্যে অভিযানের সময় প্রথমদিকে তিনি পারস্যের সীমানার বেশি গভীরে প্রবেশ করেন নি এবং সবসময় আরবের মরুভূমিকে পেছনের দিকে রেখে লড়াই করেছেন যাতে কোনো কারণে পরাজয় ঘটলে পিছু হটা যায়। পারস্য ও পারস্যের মিত্রবাহিনী বিক্ষিপ্ত হয়ে পড়ার পর তিনি ইউফ্রেটিস অঞ্চলের গভীরে প্রবেশ করে ইরাকের আঞ্চলিক রাজধানী হিরা অধিকার করে নেন। ইয়ারমুকের ভূপ্রকৃতিকেও তিনি বাইজেন্টাইনদের বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়েছেন।

১৩শ শতাব্দীতে মোঙ্গলদের আগমনের পূর্ব পর্যন্ত দ্রুতগামিতার দিক থেকে কোনো বাহিনীই খালিদ (রাঃ) বাহিনীর সমকক্ষ ছিল না। মরুভূমির আরব এবং স্তেপের মোঙ্গলদের কৌশল অনেকাংশ একইরূপ ছিল। সমগ্র আরব সেনাদল উটে চড়ে অগ্রসর হত; অন্যদিকে মোঙ্গলরা ঘোড়ায় চড়ে অগ্রসর হত। তবে আরবদের মধ্যে আরোহী তীরন্দাজ যোদ্ধা ছিল না। আচমকা হামলা ছিল খালিদ (রাঃ) সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত রণকৌশল। জুমাইল, মুজাইয়াহ ও সানিইতে তিনি এরূপ আক্রমণ পরিচালনা করেছেন। তার দ্রুত চলাচলে সক্ষম বাহিনী দ্রুত পার্সিয়ান ও তাদের আরব মিত্রদের ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। মারাজ-আল-দিবাজের যুদ্ধেও তার বাহিনী বাইজেন্টাইন বাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে একই সময় চারটি পৃথক যুদ্ধক্ষেত্র তৈরি করে। এই কৌশলটি ১৩শ শতাব্দীতে মোঙ্গল সেনাবাহিনীর প্রধান রণকৌশলে পরিণত হয়।

ইতিহাসবিদ ওয়াকিদি লিখেছেন যে মারাজ-আল-দিবাজের যুদ্ধের পর সম্রাট হেরাক্লিয়াস তার মেয়ের মুক্তির জন্য খালিদের কাছে একজন দূত পাঠান। দূত খালিদ (রাঃ) কে সম্রাটের যে চিঠি দেন তাতে নিম্নোক্ত কথা লেখা ছিল :

খালিদ (রাঃ) দূতকে বলেন :

দূত হেরাক্লিয়াসের মেয়েকে নিয়ে এন্টিওকে ফিরে আসেন।

রোমান সিরিয়ায় খালিদ (রাঃ) অগ্রযাত্রা তার কৌশলগত প্রণালীর একটি উদাহরণ। সম্রাট হেরাক্লিয়াস তার সব গেরিসন সৈনিককে সিরিয়ায় আজনাদয়ানের দিকে পাঠান যাতে মুসলিমদের সিরিয়া-আরব সীমান্তে ঠেকিয়ে রাখা যায়। দক্ষিণ দিকের সিরিয়া-আরব পথের মধ্য দিয়ে অতিরিক্ত সৈন্য আসবে এমনটা ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু খালিদ (রাঃ) এসময় ইরাকে ছিলেন। তিনি পুরোপুরি অনাকাঙ্ক্ষীত একটি পথ বেছে নেন : বাইজেন্টাইন বাহিনীকে চমকে দেওয়ার জন্য তিনি পানিবিহীন সিরিয়ান মরুভূমির মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে উত্তর সিরিয়ায় উপস্থিত হন। তিনি দ্রুত কয়েকটি শহর অধিকার করে নেন ফলে আজনাদয়ানের বাইজেন্টাইন বাহিনীর সাথে সম্রাট হেরাক্লিয়াসের অবস্থানস্থল এমেসার সদরদপ্তরের যোগাযোগের পথ বন্ধ হয়ে যায়।



সিরিয়া আক্রমণের সময় খালিদ (রাঃ) উচ্চশ্রেণির হালকা অশ্বারোহী মোবাইল গার্ড বাহিনী মুসলিম অশ্বারোহী বাহিনীর মূল হিসেবে কাজ করেছে। এতে উচ্চ প্রশিক্ষিত ও দক্ষ সৈনিকদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এবং তাদের অধিকাংশ খালিদ (রাঃ) আরব ও পারস্য অভিযানের সময় সরাসরি তার অধীনে লড়াই করেছে।মুসলিম অশ্বারোহীরা ছিল হালকা অশ্বারোহী বাহিনী এবং তারা ৫ মিটার দীর্ঘ বল্লম ব্যবহার করত। তারা অকল্পনীয় গতিতে এবং সাধারণত কার ওয়া ফার কৌশলে (আধুনিক "হিট এন্ড রান") আক্রমণ করত। তারা প্রতিপক্ষ দলের পার্শ্বভাগ ও পশ্চাৎভাগেও আক্রমণ করত। তাদের রণকৌশলের কারণে বাইজেন্টাইন ও সাসানীয় ভারী অশ্বারোহীদের বিরুদ্ধে তারা খুবই কার্যকরভাবে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। ইয়ারমুকের যুদ্ধের চূড়ান্ত দিনে পার্শ্বভাগের আক্রমণের মাধ্যমে আরোহী সেনাদলের সক্ষমতা ব্যবহারে তার নৈপুণ্য ফুটে উঠেছে।

রোমান ও পার্সিয়ানরা প্রতিপক্ষ আরবদের তুলনায় অনেক ভারি বর্মে সজ্জিত থাকত ফলে লড়াইয়ের তারা সহজে আক্রমণযোগ্য হয়ে উঠে এবং প্রতিপক্ষের তীরন্দাজদের সহজ শিকারে পরিণত হয়। যুদ্ধের সময় তিনি গুপ্তচরদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতেন এবং এজন্য স্থানীয় লোকজনকে নিয়োগ দিতেন। ইতিহাসবিদ আল-তাবারি বলেন :

তিনি (খালিদ) নিজে ঘুমান নি এবং অন্যদের ঘুমাতে দেন নি; তার কাছ থেকে কিছু গোপন করা যেত না।

— আল-তাবারি, তারিখুল রসুল ওয়াল মুলুক

রাজনৈতিকঃ

খালিদ (রাঃ) (৬৩২-৬৩৩) সাল পর্যন্ত ইরাকের সামরিক গভর্নর ছিলেন এছাড়াও তিনি উত্তর সিরিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সেনাছাউনি চেলসিসেরও গভর্নর হিসেবে দায়িত্বপালন করেছেন।

ধর্মীয় মর্যাদাঃ

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) একজন সাহাবী ছিলেন। এ কারণে সুন্নি মুসলিমদের কাছে তিনি খুবই সম্মানিত। মুতার যুদ্ধে বিজয়ের পর মুহাম্মাদ (সা.) তাকে “আল্লাহর তলোয়ার” উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন।

শিয়ারা খালিদ (রাঃ) কে সম্মানিত মনে করে না। শিয়া মতানুযায়ী আলি (রাঃ) এর নামে ফেতনা সৃষ্টিকারীদের দমনের জন্য খলিফা আবু বকর (রাঃ) কে খালিদ সহায়তা করেছিলেন।

বিভিন্ন মাধ্যমে উপস্থাপনঃ

  • ইসলামের প্রথম যুগের উপর নির্মিত উমর সিরিজে খালিদ বিন ওয়ালিদের ভূমিকায় সিরিয়ান অভিনেতা মেহয়ার খাদ্দাওর অভিনয় করেছেন। এই সিরিজে খালিদের চরিত্রটি অন্যতম প্রধান চরিত্র ছিল।
  • ২০০৬-২০০৭ সালের সিরিয়ান টিভি ধারাবাহিক খালিদ বিন ওয়ালিদ-এ বাসসেম ইয়াখুর খালিদ বিন ওয়ালিদের চরিত্রে অভিনয় করেন।
  • সিভিলাইজেশন ৫ এবং সিভিলাইজেশন ৪ গেমের বর্ধিত অংশে খালিদকে একজন সেনাপতি হিসেবে দেখানো হয়েছে।
  • বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ফ্রিগেট বিএনএস খালিদ ইবনে ওয়ালিদ তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।
  • কাজী নজরুল ইসলাম  "খালিদ" নামে একটি কবিতা লিখেছেন। এতে তিনি খালিদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং স্বদেশবাসীর পরাধীনতার কারণে দুঃখ প্রকাশ করেন।
  • পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে মূল যুদ্ধট্যাঙ্ক আল-খালিদ তার নামে নামকরণ করা হয়েছে।
  • পাকিস্তার নৌ বাহিনীর আগস্টা ৯০বি ক্লাস সাবমেরিন পিএনএস/এম খালিদ (এস১৩৭)।
  • উপসাগরীয় যুদ্ধে অপরেশন ডেজার্ট  স্টর্মে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রেরিত সেনাদলের নাম ছিল "খালিদ বিন ওয়ালিদ ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্মর্ড ব্রিগেড গ্রুপ"।

পরিবারঃ

খালিদ (রাঃ) পিতা ওয়ালিদ কয়েকটি বিয়ে করেছিলেন বলে জানা যায় এবং তার বেশ কয়েকজন সন্তান ছিল। তবে অল্পকয়েকজনের নাম জানা যায়।

ওয়ালিদের পুত্র : (খালিদের ভাই)
  • হিশাম ইবনে ওয়ালিদ
  • ওয়ালিদ ইবনে ওয়ালিদ
  • আম্মারাহ ইবনে ওয়ালিদ 
  • আবদুল শামস ইবনে ওয়ালিদ।
ওয়ালিদের কন্যা : (খালিদের বোন)
  • ফাখতাহ বিনতে ওয়ালিদ
  • ফাতিমা বিনতে ওয়ালিদ।
  • নাজিয়াহ বিনতে ওয়ালিদ (বিতর্ক আছে).

খালিদ (রাঃ) কয়জন সন্তান ছিল তা সঠিক জানা যায় না। তবে তিনজন পুত্র ও একজন অজ্ঞাতনামা কন্যার কথা জানা যায় :

  • সুলাইমান বিন খালিদ
  • আবদুর রহমান ইবনে খালিদ
  • মুহাজির বিন খালিদ।

খালিদের জ্যেষ্ঠ পুত্র সুলাইমান ইবনে খালিদ মুসলিমদের মিশর বিজয়ের সময় নিহত হন। তবে অন্য কিছু সূত্র অনুযায়ী ৬৩৯ সালে দারবাকিরে মুসলিম অবরোধের সময় তিনি নিহত হন। মুহাজির বিন খালিদ সিফফিনের যুদ্ধে খলিফা আলি (রাঃ) এর পক্ষে লড়াই করার সময় নিহত হন। আবদুর রহমান ইবনে খলিদ তৃতীয় খলিফা উসমান (রাঃ) এর শাসনামলে এমেসার গভর্নর ছিলেন। তিনি সিফফিনের যুদ্ধে মুয়াবিয়ার অন্যতম সেনাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে ৬৬৪ সালে কনস্টান্টিনোপলে অবরোধের সময় তিনি উমাইয়া সেনাবাহিনীতে ছিলেন।

নতুন বিষয়ের পর্ব আসছে...

আরো পড়তে পারেনঃ

খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রাঃ)। পর্ব-১

খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ (রাঃ)। পর্ব-২

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ)।পর্ব- ৩

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ)।পর্ব- ৪


সাহাবীদের ইতিহাস


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

গরমে চুলকানি থেকে মুক্ত থাকার কার্যকরী উপায়।

  গরমের দিনে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চুলকানির সমস্যা অনেকেরই বেড়ে যায়। ঘাম, আর্দ্রতা, ত্বকের সংবেদনশীলতা কিংবা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারণে এই অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। তবে কিছু সচেতনতা ও ঘরোয়া পদ্ধতি মেনে চললে গরমেও চুলকানি থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত: গরমে চুলকানির প্রধান কারণঃ ১. ঘাম ও ময়লা জমা: ঘামের সাথে ময়লা ও ব্যাকটেরিয়া মিশে ত্বকে জমে, যা রোমকূপ বন্ধ করে ফুসকুড়ি বা চুলকানি সৃষ্টি করে।   ২. শুষ্ক ত্বক: গরমে পানিশূন্যতা ও এসি/ফ্যানের কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে চুলকায়।   ৩. অ্যালার্জি: গরমে ধুলোবালি, পরাগরেণু বা সিনথেটিক কাপড়ের সংস্পর্শে অ্যালার্জিজনিত চুলকানি হতে পারে।   ৪. মশা-মাছির কামড়: গরমে মশা-পোকা বেশি সক্রিয় হয়, তাদের কামড়ে ত্বকে জ্বালাপোড়া ও চুলকানি দেখা দেয়।   চুলকানি প্রতিরোধের ১০টি টিপসঃ ১. পরিষ্কার থাকুন: দিনে অন্তত দুবার হালকা গরম পানিতে গোসল করুন। ঘাম ও ময়লা দূর করতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করুন।   ২. হালকা সুতির পোশাক: টাইট বা সিনথেটিক কাপড় এড়িয়ে সুতি/লিনেনের ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। এ...

Write a paragraph on "The consequences of climate change in Bangladesh"

  The consequences of climate change in Bangladesh Climate change poses severe threats to Bangladesh, a low-lying delta nation highly vulnerable to environmental shifts. Rising sea levels exacerbate coastal erosion, displacing communities and submerging arable land, while saltwater intrusion contaminates freshwater sources and soil, crippling agriculture—a lifeline for millions. Intensified cyclones, such as Cyclone Sidr and Aila, and erratic monsoon patterns cause devastating floods and riverbank erosion, destroying homes, infrastructure, and livelihoods. By 2050, up to 18 million people could be displaced due to climate impacts. The Sundarbans, a critical mangrove ecosystem and natural storm barrier, faces degradation, threatening biodiversity and coastal resilience. Concurrently, shifting temperatures and rainfall disrupt crop yields, heightening food insecurity and poverty. Health risks from waterborne diseases and heatwaves further strain vulnerable populations. With limited r...

Write a paragraph about 'Three Zero Theory'

Three Zero Theory  Muhammad Yunus's Three Zero Theory presents a revolutionary approach to sustainable development through three ambitious goals: eliminating poverty, unemployment, and net carbon emissions. The Nobel laureate and microfinance pioneer argues that these interconnected challenges must be addressed simultaneously to create a just and sustainable world. His first zero - zero poverty - builds on his groundbreaking microcredit model, empowering the poor through access to capital and social businesses. The second zero - zero unemployment - promotes an entrepreneurial economy where everyone can become a job creator rather than a job seeker. The final zero - zero net carbon emissions - calls for environmentally responsible business practices to combat climate change. This holistic framework reimagines capitalism by prioritizing social welfare over profit maximization, offering practical solutions to global crises. Yunus's theory has gained international recognition as a ...