একদিন এক মহিলা এক হুজুরের কাছে এলেন, এবং বললেন, “ হুজুর আমার স্বামী আমাকে একটুও ভালোবাসে না এবং সে আমার প্রতি খারাপ আচারণ করে। আমাকে এমন একটা তাবিজ দেন যাতে আমার স্বামী আমাকে ভালোবাসে এবং আমার সাথে ভালো আচারন করে।” হুজুর কিছুক্ষণ ভাবলেন এবং মুচকি হেসে বললেন, ”প্রতিটা সংসারে এই সমস্যা আছে। তবেে এই সমস্যা দূর করার জন্য যে তাবিজ তার জন্য সিংহের ঘাড়ের পশম লাগবে। যদি সত্যিই আপনি সমস্যা থেকে মুক্ত হতে চান তাহলে আপনাকে সিংহের ঘাড়ের পশম নিয়ে আসতে হবে।”
হুজুরের কথা শুনে মহিলা খুবই চিন্তায় পড়ে গেলেন এবং ভাবলেন এটা তো প্রায় অসম্ভব।কিন্তু মহিলা ছিল খুবই জেদি। সে ভাবতে থাকলো কিভাবে সিংহের ঘাড়ের পশম পাওয়া যায়! এজন্য সে সিংহ সম্পর্কে জানতে আরম্ভ করে এবং সিংহ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারলো। এক পর্যায়ে জানতে পারলো, সিংহ শুধু ক্ষুধার্ত অবস্থায় আক্রমন করে। এটা জেনে মহিলা গভীর জঙ্গলে গেলেন এবং সিংহের উপর দূর থেকে নজর রাখলেন।এবং দূর থেকে সিংহের দিকে খাবার ছুড়ে মারতে লাগলেন এক সময়ে মহিলা সিংহের কাছাকাছি চলে আসলেন। কিন্তু সিংহের কাছাকাছি আসার পরেও সিংহ মহিলাকে আক্রমন করলো না। উল্টো তাদের মধ্যে ভাব হওয়ার বিষয়টি মহিলাটি বুঝতে পারলেন। মহিলা সিংহের বিরক্তির বিষয়গু এড়িয়ে সিংহের নিকট থাকা অরম্ভ করলো এবং সুযোগ মত সিংহের ঘাড়ের পশম সংগ্রহ করে নেয়।
তারপর সে আনন্দ চিত্তে হুজুরের কাছে সিংহের ঘাড়ের পশম নিয়ে যায়। এবং সে পুরো ঘটনা হুজুরকে খুলে বলল। হুজুর মহিলার ঘটনা মনযোগ দিয়ে শুনে, কিছুক্ষণ মুচকি হাসলেন, তারপর হুজুর মহিলাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “আপনি সিংহের কাছে কিভাবে পৌঁছালেন এবং কিভাবে হিংস্র প্রাণীটাকে কিভাবে বস করলেন?” জবাবে মহিলা বলল যে, “আমি সিংহের কোনটা বিরক্তির কারন এবং কোনটা তার পছন্দের সেটা আগে জানলাম তারপর সে অনুযায়ী সিংহের বিরক্তির কারন গুলো এড়িয়ে গেলাম এবং সিংহের পছন্দের বিষয় গুলো করতে থাকলাম এর ফলে আমি সিংহের অতি নিকটে পৌঁছালাম। কিন্তু সিংহ আমার প্রতি হিংস্রতা দেখায় নি।”
মহিলার উত্তর শুনে হুজুর বললেন, “আপনার স্বামী কি সিংহের থেকেও হিংস্র?” জাবাবে মহিলা বললো, “ তা কেন হবে!”
তারপর হুজুর বললেন, “ আপনি যদি আপনার স্বামীর কি সে অসুবিধা এবং কি করলে তিনি খুশি হবেন এটা জেনে নিতেন এবং সে অনুযায়ী তাকে খুশি করার চেষ্টা করতেন তাহলে তিনিও আপনাকে খুশি করার জন্য অবশ্যই চেষ্টা করতেন। ফলে আপনাদের একে অপরের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হতো। আমরা যেখানে সমস্যা সেটার সমাধান করতে রাজি না। কিন্ত ভুল পথে সমস্যার সমাধানের জন্য নিজের জীবনের ঝুঁকি নিতেও পিছপা হই না।”
আসলে প্রতিটা পরিবারেই এক পর্যায়ে সবাই সবাইকে বঞ্চিত মনে করতে পারে এবং একে অপরের প্রতি বিরক্ত হতে পারে। যে কারনে অহেতুক বিষয় নিয়েও ঝগড়া বিবাদ তৈরী হয়। এবং সবাই তখন বলতে চায় কিন্তু শুনতে চায় না অথবা কথা শুনে পাল্টা পাল্টা আঘাতের জন্য যা মোটেই উচিৎ না। অথচ আমাদের একে অপরের কথা শুনা উচিৎ অপরকে বলতে দেওয়া উচিৎ, এবং কথার ভিন্ন অর্থ বানানো মোটেই উচিৎ না। আমরা বাহিরের মানুষকে খুশি করতে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করি অথচ বাসায় আমরা উল্টোটা করি যা সমস্যা বাড়ায়। আমাদের উচিৎ বাসায় সুন্দর ব্যবহার করা যাতে পরিবারে শান্তি আসে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন