সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মন পাওয়ার তাবিজ।

 একদিন এক মহিলা এক হুজুরের কাছে এলেন,  এবং বললেন, “ হুজুর আমার স্বামী আমাকে একটুও ভালোবাসে না এবং সে আমার প্রতি খারাপ আচারণ করে। আমাকে এমন একটা তাবিজ দেন যাতে আমার স্বামী আমাকে ভালোবাসে এবং আমার সাথে ভালো আচারন করে।” হুজুর কিছুক্ষণ ভাবলেন এবং মুচকি হেসে বললেন, ”প্রতিটা সংসারে এই সমস্যা আছে। তবেে এই সমস্যা দূর করার জন্য যে তাবিজ তার জন্য সিংহের ঘাড়ের পশম লাগবে। যদি সত্যিই আপনি সমস্যা থেকে মুক্ত হতে চান তাহলে আপনাকে সিংহের ঘাড়ের পশম নিয়ে আসতে হবে।”  

হুজুরের কথা শুনে মহিলা খুবই চিন্তায় পড়ে গেলেন এবং ভাবলেন এটা তো প্রায় অসম্ভব।কিন্তু মহিলা ছিল খুবই জেদি। সে ভাবতে থাকলো কিভাবে সিংহের ঘাড়ের পশম পাওয়া যায়! এজন্য সে সিংহ সম্পর্কে জানতে আরম্ভ করে এবং সিংহ সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে পারলো। এক পর্যায়ে জানতে পারলো, সিংহ শুধু ক্ষুধার্ত অবস্থায় আক্রমন করে। এটা জেনে মহিলা গভীর জঙ্গলে গেলেন এবং সিংহের উপর দূর থেকে নজর রাখলেন।এবং দূর থেকে সিংহের দিকে খাবার ছুড়ে মারতে লাগলেন এক সময়ে মহিলা সিংহের কাছাকাছি চলে আসলেন। কিন্তু সিংহের কাছাকাছি আসার পরেও সিংহ মহিলাকে আক্রমন করলো না। উল্টো তাদের মধ্যে ভাব হওয়ার বিষয়টি মহিলাটি বুঝতে পারলেন। মহিলা সিংহের বিরক্তির বিষয়গু এড়িয়ে সিংহের নিকট থাকা অরম্ভ করলো এবং সুযোগ মত সিংহের ঘাড়ের পশম সংগ্রহ করে নেয়।  

 তারপর সে আনন্দ চিত্তে হুজুরের কাছে সিংহের ঘাড়ের পশম নিয়ে যায়। এবং সে পুরো ঘটনা হুজুরকে খুলে বলল। হুজুর মহিলার ঘটনা মনযোগ দিয়ে শুনে, কিছুক্ষণ মুচকি হাসলেন, তারপর হুজুর মহিলাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “আপনি সিংহের কাছে কিভাবে পৌঁছালেন এবং কিভাবে হিংস্র প্রাণীটাকে কিভাবে বস করলেন?” জবাবে মহিলা বলল যে, “আমি সিংহের কোনটা বিরক্তির কারন এবং কোনটা তার পছন্দের সেটা আগে জানলাম তারপর সে অনুযায়ী সিংহের বিরক্তির কারন গুলো এড়িয়ে গেলাম এবং  সিংহের পছন্দের বিষয় গুলো করতে থাকলাম এর ফলে আমি সিংহের অতি নিকটে পৌঁছালাম। কিন্তু সিংহ আমার  প্রতি হিংস্রতা দেখায় নি।”
মন পাওয়ার তাবিজ।



মহিলার উত্তর শুনে হুজুর বললেন, “আপনার স্বামী কি সিংহের  থেকেও হিংস্র?” জাবাবে মহিলা বললো, “ তা কেন হবে!”

তারপর হুজুর বললেন, “ আপনি যদি  আপনার স্বামীর কি সে অসুবিধা এবং কি করলে তিনি খুশি হবেন এটা জেনে নিতেন  এবং সে অনুযায়ী তাকে খুশি করার চেষ্টা করতেন তাহলে তিনিও আপনাকে খুশি করার জন্য অবশ্যই চেষ্টা করতেন। ফলে আপনাদের একে অপরের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝির অবসান হতো। আমরা যেখানে সমস্যা সেটার সমাধান করতে রাজি না। কিন্ত ভুল পথে সমস্যার সমাধানের জন্য নিজের  জীবনের ঝুঁকি নিতেও পিছপা হই না।”

আসলে প্রতিটা পরিবারেই এক পর্যায়ে সবাই সবাইকে বঞ্চিত মনে করতে পারে এবং একে অপরের প্রতি বিরক্ত হতে পারে। যে কারনে অহেতুক বিষয় নিয়েও ঝগড়া বিবাদ তৈরী হয়। এবং সবাই তখন বলতে চায় কিন্তু শুনতে চায় না অথবা কথা শুনে পাল্টা  পাল্টা আঘাতের জন্য যা মোটেই উচিৎ না। অথচ আমাদের একে অপরের কথা শুনা উচিৎ অপরকে বলতে দেওয়া উচিৎ, এবং কথার ভিন্ন অর্থ বানানো মোটেই উচিৎ না। আমরা বাহিরের মানুষকে খুশি করতে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করি অথচ বাসায় আমরা উল্টোটা করি যা সমস্যা বাড়ায়। আমাদের উচিৎ বাসায় সুন্দর ব্যবহার করা যাতে পরিবারে শান্তি আসে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আস্তাগফিরুল্লাহ! বলার ফজিলত নিয়ে ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এর চমৎকার গল্প অবলম্বনে।

হোম   আল-কুরআন   আল-হাদিস   সংবাদপত্র   চাকরি   পরীক্ষার রেজাল্ট   সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আলহামদুলিল্লাহ!  শুরুতেই বলে রাখি, ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) ছিলেন ইমাম বুখারী (রহঃ) এর ওস্তাদ। তিনি ১০ লক্ষ হাদিস মুখস্ত রেখেছিলেন। তিনি যে হাদিস গ্রন্থ লিখেছিলেন তার নাম মুসনাদে আহমদ। সেখানে তিনি প্রায় ৪০ হাজার হাদিস লিপিবদ্ধ করেছিলেন। একদিনের_ঘটনা!  ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) বৃদ্ধ মানুষটি হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলেন মসজিদের সামনে! এত রাতে কোন মানুষজনের ঘরে গিয়ে তাঁদের কষ্টের কারণ হতে চান নি তিনি। সেকারণেই চেয়েছিলেন মসজিদেই কাটিয়ে দিবেন রাতটুকু। নফল ছালাত আর কিছুটা ঘুমিয়ে দিব্যি রাত কাটিয়ে দেয়া যেত। কিন্তু বাধ সাধলেন মসজিদের খাদেম। কোন এক অজানা কারণে তাঁকে পছন্দ করলেন না খাদেম। স্রেফ মানা করে দিলেন খাদেম– মসজিদে রাত কাটানো যাবে না। মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে খাদেম সাহেব সেই কথাটি-ই বেশ উঁচু গলায় কথা বলে দিলেন বৃদ্ধকে। মসজিদ সাথে লাগানো রুটির দোকানে মধ্য বয়স্ক একজন বিশাল তন্দুরে রুটি বানাচ্ছেন। খাদেমের চড়া গলা তাঁর কানে পর্যন্ত গেল। রুটি বান...

খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ)।পর্ব- ৪

  উমর (রাঃ) এর যুগ (৬৩৪–৬৪২) খালিদ (রাঃ) এর পদচ্যুতিঃ ৬৩৪ সালের ২২ আগস্ট আবু বকর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি উমর (রাঃ) কে নিজের উত্তরসূরি নিয়োগ দিয়ে গিয়েছিলেন। খলিফা হওয়ার পর উমর খালিদকে পদচ্যুত করে আবু উবাইদা (রাঃ) কে সেনাপতি নিয়োগ করেন। খালিদ (রাঃ) অপরাজেয় হওয়ায় অনেক মুসলিম তার কারণে যুদ্ধে বিজয় অর্জিত হচ্ছে বলে বিশ্বাস করতে শুরু করে। এই ব্যাপারে উমর (রাঃ) বলেছিলেন :"আমি খালিদ বিন ওয়ালিদকে আমার ক্রোধ বা তার দায়িত্বহীনতার কারণে অব্যাহতি দিই নি, এর কারণ ছিল আমি লোকদের জানাতে চাইছিলাম যে বিজয় আল্লাহর তরফ থেকে আসে।" খালিদ (রাঃ)  খলিফার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে নির্দেশ অনুযায়ী আবু উবাইদা (রাঃ) এর অধীনে দায়িত্ব পালন করতে থাকেন। তিনি বলেছিলেন : " যদি আবু বকর মৃত্যুবরণ করেন আর উমর খলিফা হন, তবে আমরা শুনব এবং মানব  " আবু উবাইদা (রাঃ) এর নেতৃত্বে এরপর সিরিয়া অভিযান চলতে থাকে। আবু উবাইদা খালিদের গুণগ্রাহী ছিলেন। তিনি খালিদ (রাঃ) কে অশ্বারোহী বাহিনীর নেতৃত্ব প্রদান করেন এবং নিজের সামরিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন। মধ্য লেভান...

১. হযরত আদম (আঃ) পর্বঃ-১

বিশ্ব ইতিহাসে প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী হিসাবে আল্লাহ পাক আদম (আলাইহিস সালাম)-কে নিজ দু’হাত দ্বারা সরাসরি সৃষ্টি করেন (ছোয়াদ ৩৮/৭৫)। মাটির সকল উপাদানের সার-নির্যাস একত্রিত করে আঠালো ও পোড়ামাটির ন্যায় শুষ্ক মাটির তৈরী সুন্দরতম অবয়বে রূহ ফুঁকে দিয়ে আল্লাহ আদমকে সৃষ্টি করেছেন।[1] অতঃপর আদমের পাঁজর থেকে তাঁর স্ত্রী হাওয়াকে সৃষ্টি করেন।[2] আর এ কারণেই স্ত্রী জাতি স্বভাবগত ভাবেই পুরুষ জাতির অনুগামী ও পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট। অতঃপর স্বামী-স্ত্রীর মাধ্যমে যুগ যুগ ধরে একই নিয়মে মানববংশ বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রয়েছে। কুরআন-এর বর্ণনা অনুযায়ী প্রথম দিন থেকেই মানুষ পূর্ণ চেতনা ও জ্ঞান সম্পন্ন সভ্য মানুষ হিসাবেই যাত্রারম্ভ করেছে এবং আজও সেভাবেই তা অব্যাহত রয়েছে। অতএব গুহামানব, বন্যমানব, আদিম মানব ইত্যাদি বলে অসভ্য যুগ থেকে সভ্য যুগে মানুষের উত্তরণ ঘটেছে বলে কিছু কিছু ঐতিহাসিক যেসব কথা শুনিয়ে থাকেন, তা অলীক কল্পনা ব্যতীত কিছুই নয়। সূচনা থেকে এযাবত এই দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় মানুষ কখনোই মানুষ ব্যতীত অন্য কিছু ছিল না। মানুষ বানর বা উল্লুকের উদ্বর্তিত রূপ বলে ঊনবিংশ শতাব্দীতে এসে চার্লস ডারউইন (১৮০৯-১৮৮২) যে ‘বিবর্...